
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স শরিফুল ইসলামকে মারপিটের অভিযোগ উঠেছে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হকের বিরুদ্ধে। এসময় নার্স শরিফুল ইসলামকে মারপিটে সহায়তার অভিযোগ অপর দুই নার্স সালমা খাতুন ও রহিমা খাতুনের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনার সময় হাসপাতালে ছিলেন না উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোমিন উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্স) দুপুর দেড় টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আন্তঃবিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
মারপিটের শিকার সিনিয়র স্টাফ নার্স শরিফুল ইসলাম বলেন, আরএমও এর অনুসারি সাবেক দুই ইনচার্জ সালমা ও রহিমা আরএমও এর সঙ্গে যোগসাজসে নানা অবৈধ সুযোগ সুবিধা ভোগ করে এসেছে। আগে থেকে এসবের বিরুদ্ধে অবস্থান করায় আমাকে খুব একটা ভালো নজরে দেখতেন না আরএমও এবং নার্স সালমা ও রহিমা।
নার্স শরিফুল ইসলাম আরও বলেন, হাসপাতালের পরিত্যক্ত একটি ভবনের রুম সংস্কার করে পরিবার নিয়ে বিনা ভাড়ায় বসবাস করি। সম্প্রতি আরএমও এর বগুড়ার ধুনটে বদলি হওয়ায় তার কক্ষে আমাকে ডেকে রুমের ভাড়া পরিশোধের জন্য বলেন। সবাই ভাড়া দিলে আমিও ভাড়া দিবো বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে আমি তার কক্ষ থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময়ে সে আমাকে আটকে মুখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে নার্স সালমা ও রহিমা আমাকে ধরে রাখে এবং আরএমও মারতে থাকে।
হাসপাতালের সদ্য অর্ডার হওয়া আন্তঃবিভাগের ইনচার্জ রুপালি খাতুন জানান, সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী হাসপাতালের নার্সদের মধ্যে যিনি সিনিয়র তিনিই হবেন অন্তঃবিভাগের ইনচার্জ। কিন্তু এর আগে কোন নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে তার অনুসারি নার্স সালমা ও রহিমাকে ইনচার্জের দায়িত্ব দেন। সম্প্রতি আমার ইনচার্জের অর্ডার হওয়া ও পরিত্যক্ত বাসার জোর করে ভাড়া আদায় নিয়ে আরএমও ক্ষীপ্ত হয়ে সহকর্মী শরিফুলকে বেধরম মারপিট করে। এতে সহযোগিতা করেন নার্স সালমা ও রহিমা। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
মারপিটে সহায়তা করা নার্স সালমা ও রহিমা অভিযোগ অস্বীকার করে দুইজনের মারামারি ঠেকাতে গিয়েছিলেন বলে তারা দাবি করেন।
অভিযুক্ত হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সুমনুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাসা ভাড়া চাওয়ায় আমার উপর ক্ষীপ্ত হয় নার্স শরিফুল ইসলাম। কোন মারামারির ঘটনা ঘটেনি।
জেলা পাবলিক হেলথ নার্স রেখা রানী দে জানান, আগামী শনিবার এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ব্যবস্থা নিবেন। যদি না নেন তাহলে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোমিন উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার সকালে অফিসের কাজ সেরে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিজিটে বের হয়েছিলাম। তবে শনিবার হাসপাতালে গিয়ে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. নুরুল আমীন বলেন, আরএমও ও নার্সের বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।