
মরু অঞ্চলের সুস্বাদু ও মিষ্টি জাতের ফল সাম্মাম। বাংলাদেশে আগে থেকেই বিদেশি এই ফলের আবাদ হলেও সিরাজগঞ্জের তাড়াশে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সাম্মাম চাষ করেছেন কামরুল ইসলাম (৩৬)। সাম্মাম গ্রীষ্মকালীন ফল হলেও দাম ভালো পাওয়ার জন্য আগাম চাষ শুরু করেছেন কামরুল ইসলাম। প্রথম পর্যায়ে ১৫ কাটা জমিতে চাষ শুরু করছেন তিনি।
ছোট কুমড়ার আকারের সাম্মাম ফলের ভেতরটা দেখতে ও খেতে বাঙ্গির মতো। আমাদের দেশে ফলটি সাম্মাম হিসেবে পরিচিতি পেলেও, অনেকে এটাকে রকমেলন বা হানিডিউ মেলন নামে চেনেন। আগে দেশে এর খুব একটা চাষ হয়নি। বর্তমানে অনেক কৃষক বিদেশি এই ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
তাড়াশ উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের সগুনা গ্রামে কামরুল ইসলাম সাম্মামখেত। সম্প্রতি সেখানে সরেজমিনে দেখা যায়, সাম্মামগাছে ঝুলছে গোলাকৃতির ফল। প্রায় প্রতিটি গাছে দুই থেকে তিনটি করে ফল ধরেছে।
কামরুল ইসলাম তাঁর খেত ঘুরিয়ে দেখান আর তাঁর কৃষিতে আগ্রহী হওয়ার গল্প শোনান। এ সময় তিনি নিজের খেতে সবজি চাষ শুরু করেন। বাড়তি আয়ের জন্য তিনি এ বছর সবজি চাষের পাশাপাশি সাম্মামও চাষ করেছেন।
মরুভূমির ফল চাষের বিষয়ে কামরুল ইসলাম জানান, ‘সবজির পাশাপাশি নতুন কিছু একটা চাষ করার জন্য খুঁজছিলাম। ইউটিউব ঘেঁটে সাম্মাম সম্পর্কে জানতে পারি। বিষয়টি নিয়ে পরিচিত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলি। ঢাকার পরিচিত সবজি ও ফল আমদানি–রপ্তানিকারক এক ব্যবসায়ী সাম্মাম চাষে উৎসাহ দেন। ওই ব্যবসায়ী ইন্দোনেশিয়া থেকে জাম্বু জাতের সাম্মাম ফলের বীজ সংগ্রহ করে দেন।
কামরুল ইসলাম আরও জানান, চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে ফল পাকা শুরু হয়।
প্রতিটি গাছে দুই-তিনটি করে ফল ধরেছে। প্রতিটি ফল দুই থেকে আড়াই কেজি ওজনের হয়েছে।
কামরুল ইসলাম বলেন, তাড়াশ উপজেলা প্রথম চাষি হিসেবে মৌসুমের আগেই চাষ করেছেন। কারণ, আগাম চাষ করলে বাজারদর ভালো পাওয়া যায়।
তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বেলে বা বেলে দোআঁশ মাটিতে সাম্মাম চাষ করলে ভালো ফলন হবে। এই ফলের চাষ করে লোকসানের আশঙ্কা নেই। সাম্মাম চাষে কেউ আগ্রহী হলে কৃষি অধিদপ্তর থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।