পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী প্রাণী: কোয়াকা

প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ১০, ২০২৫

সুখের সংজ্ঞা কী? যদি কোনো প্রাণীর মুখের অভিব্যক্তির ওপর নির্ভর করে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়, তবে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী প্রাণী বলা যেতে পারে কোয়াকাকে। অস্ট্রেলিয়ার এ ছোট্ট নিরীহ প্রাণীটি তার হাসিমুখের জন্য বিখ্যাত, যা একে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী প্রাণীর উপাধি এনে দিয়েছে।

কোয়াকা: হাসিমুখের রহস্য

কোয়াকা একটি ছোট আকৃতির মারসুপিয়াল (থলেবিশিষ্ট প্রাণী), যার বসবাস মূলত অস্ট্রেলিয়ার রোটনেস্ট আইল্যান্ড ও পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে। এদের গোলগাল শরীর, বড় বড় চোখ ও সবসময় হাসির মতো দেখতে মুখের জন্য মানুষ একে ভীষণ পছন্দ করে।

বিজ্ঞানীরা বলেন, কোয়াকার মুখের পেশীগুলোর বিশেষ গঠনই তাদের সবসময় হাসিখুশি দেখায়। তবে এটি নিছকই প্রকৃতির খেলা, কোয়াকা সত্যিকারের হাসতে জানে না। কিন্তু তাদের সহজাত বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ ও মানবসঙ্গ উপভোগ করার ক্ষমতা একে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।

কোয়াকার জীবনধারা

কোয়াকা সাধারণত ঘাস, পাতা, গাছের শাখা-প্রশাখা খেয়ে বেঁচে থাকে। তারা অত্যন্ত সামাজিক প্রাণী, দিনের বেলা বিশ্রাম নেয় এবং রাতে খাবারের সন্ধানে বের হয়। রোটনেস্ট আইল্যান্ডে পর্যটকরা কোয়াকার সঙ্গে ছবি তোলার জন্য ভিড় করেন, কারণ এই প্রাণীর সঙ্গে তোলা সেলফিগুলো স্বাভাবিকভাবেই ‘হাসিমুখী’ হয়ে যায়।

সংরক্ষণ প্রচেষ্টা ও হুমকি

কোয়াকার সংখ্যা ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে, কারণ বনভূমি ধ্বংস, জলবায়ু পরিবর্তন ও শিকারিদের আক্রমণে এদের জীবন হুমকির মুখে পড়ছে। যদিও রোটনেস্ট আইল্যান্ডে এদের সংখ্যা তুলনামূলক বেশি, মূল ভূখণ্ডে এটি বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে।

স্থানীয় সরকার ও সংরক্ষণ সংস্থাগুলো কোয়াকার আবাসস্থল রক্ষায় কাজ করছে এবং পর্যটকদের জন্য সচেতনতা কর্মসূচি পরিচালনা করছে, যাতে এই প্রাণীগুলোর জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।

কেন কোয়াকা ‘সবচেয়ে সুখী প্রাণী’?

যদিও সুখ একটি আপেক্ষিক বিষয়, কোয়াকার সদা-হাস্যময় মুখ ও নিরীহ স্বভাব একে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী প্রাণীর স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। আজকের ব্যস্ত ও চাপযুক্ত জীবনে কোয়াকার মুখের দিকে তাকালে যেন প্রকৃত সুখের এক ঝলক দেখা যায়।